ক্যাটওয়াক অনুশীলন করতে হলে শুরুতেই সামনের দিকে দূরে তাকাতে হয়। রানওয়েতে কোথাও বা বা কারো দিকে মডেলরা তাকায় না। অনুশীলনের সময় মেঝে থেকে হাঁটার জায়গায় থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে ফাঁকা করতে হয়।
চিবুক সামান্য নিচের দিকে রাখতে হবে। মাথা কাত বা নিচু করে রাখা যাবে না – এমনভাবে মাথা রাখতে হবে যেন কেউ অদৃশ্য দড়ি বেঁধে মাথা উপর থেকে আটকে রেখেছে। কারণ মডেল ক্যাটওয়াকের সময় দর্শকদের থেকে উঁচু স্টেইজে থাকে, তাই চিবুকটি সামান্য নিচে রাখলে দর্শক মডেলের মুখ আরও সুন্দরভাবে দেখতে পাবে। এছাড়া, চিবুকটি কিছুটা কাত করে রাখলে মুখের একটা এ্যাঙেল প্রকাশ পায় এবং এতে কিছুটা এ্যাটিটিউডও আসে।
মুখ থেকে সবধরনের অভিব্যক্তি সরিয়ে ফেলতে হয় । মুখ বন্ধ রেখে ঠোঁট
দুটো স্বাভাবিক ভাবে মিলিয়ে রেখে দাঁতের পাটি যেনো একটার সাথে আর একটা
মিলে না থাকে।
শরীর সোজা রাখার অনুশীলন করতে হয়। কল্পনা করতে হয় যেনো শরীরের মেরুদন্ড থেকে মাথা পর্যন্ত একটি সরলরেখা চলে গেছে। একবারে কুঁকুড়ে থাকা বা পাথরের মূর্তির মতো শক্ত হয়ে থাকা এড়িয়ে যেতে হয়। শরীলকে সোজা ভঙ্গিতে রাখতে হলে রোজ কিছু বই মাথায় রেখে হাঁটার অভ্যাস করতে হয় যেনো বই মাথা থেকে না পড়ে।
হাঁটার সময় স্বাভাবিক যেভাবে হাত গুলো নড়াচড়া বা দোলে সেভাবেই নড়াচড়া করে। হাত একদম নড়াচড়া করবেনা তা করা যাবে না। হাতকে তাদের নিজেদের মতো আরামদায়কভাবে দুলতে দিতে হয় বা পোষাকের ধরনের উপর পকেটেও রাখা যেতে পারে।
রেম্পে হাঁটার শুরু হয় পায়ের আঙ্গুল আগে বসিয়ে। অর্থাত আগে পায়ের আঙ্গুল বসে এরপর শরীরের ওজন পায়ের গোড়ালীর উপর বসে, এর সাথে সাথে আর একটি পা এগিয়ে যায় একই রকমভাবে। যদি এভাবে হাঁটতে সমস্যঅ হয়, তাহলে মেঝেতে একটা মোটা সরল রেখা টেনে এর উপর দিয়ে হাঁটার অভ্যাস করতে হয়। সার্কাসে দড়ির উপর যেমন দাঁড়িয়ে খেলা দেখানোর সময় হাঁটে সেভাবেই হাঁটতে হয় সরল রেখা বরাবর।
নিতম্ব দোলানো
রেম্পে হাঁটার সময় স্বাভাবিকভাবেই নিতম্ব দোলে, তাই
বাড়তি কোনো চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। কারণ হাঁটার সময় মেয়েদের নিতম্ব
এবং ছেলেদের কাঁধ দোলে এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। তবে কারো নিতম্ব যদি মনে হয়
কম দোলে তাহলে অনুশীলন করে নিতম্ব দোলানোর মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো
যেতে পারে।
ছন্দে থাকা
রেম্পে হাঁটার সময় বাজতে থাকা মিউজিকের সাথে ছন্দ মিলিয়ে
চলতে হয়। আর যদি মিউজিক না থাকে তাহলে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের মতো হাঁটার
একটি ছন্দ আয়ত্তে আনতে হয়। যা একান্তই মডেলদের নিজস্ব স্বাচ্ছন্দ্য ও
দক্ষতার বিষয়।
হাই হিল চ্যালেঞ্জ
হাই হিলে ক্যাটওয়াক অনেক চ্যালেঞ্জিং। খালি পায়ে বা
সমান সোলের জুতা পরে ক্যাটওয়াক অনুশীলন হয়ে গেলে, হাই হিল পায়ে দিয়ে
ক্যাটওয়াক চর্চা করতে হয়। এরজন্য সবচেয়ে ভালো জিম-এর ট্রেড মিল। যদি
ট্রেড মিল না থাকে তাহলে নিজের ঘরে রাস্তার ফুটপাতেই চেষ্টা চালাতে হবে
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট।
পোজ
ক্যাটওয়াক করতে করতে যখন রেম্পের শেষের দিকে পৌঁছানো হয়, তখন মডেল
সমান্য সময়ের জন্য থেমে যায় এবং পেছনে কিছুটা ঝুঁকে নিতম্বের উপর ভর
দিয়ে আত্ম বিশ্বাসের সাথে দাঁড়ায়। এই সময় মডেল দর্শকের দিকে বা
ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় তাকাতে পারে, তবে তার মাথা বা চিবুক নড়ে না খুব
একটা। শুধু চোখের দৃষ্টি-ই কাজ করে। এসময়ে পোজগুলো কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী
হয়। পোজ দৌযার সাথে সাথেই আবার ক্যাটওয়াক করে ফিরে আসতে হয়।
এসময়ে
দর্শকের চোখে দৃষ্টি পড়াতে অনেকের জড়তা বা আত্মবিশ্বাসের অভাব হতে পারে।
এজন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিদিনের অনুশীলন করতে হয়। এছাড়া শো-য়ের
আগে কোরিওগ্রাফারগণ বিভিন্ন পোজের বিষয়ে নির্দেশনা দেন।